• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

ব্যবহারিক পরিক্ষায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

  • ''
  • প্রকাশিত ০৪ অক্টোবর ২০২৩

জাহিদ শিকদার, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর বাউফলে এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান, মাননবিক ও কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বগা ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজে এমন ঘটনা ঘটে। অথচ কোন ধরনের টাকা নেয়ার বিধান নেই। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন ধরনের জমা স্লিপ ছাড়াই শিক্ষকরা ওই টাকা আদায় করছেন। শুধু ওই কলেজই নয় অভিযোগ রয়েছে উপজেলার ১০টি ডিগ্রী কলেজের সবকয়টির বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজে কোনো রশিদ ছাড়াই ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫টি ব্যবহারিক বিষয়ের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৫৫০টাকা, মানবিক বিভাগের ৩টি বিষয়ের জন্য প্রত্যেকের কাছ থেক ৫-৬শত টাকা এবং ব্যবসায়ী শাখার ১টি বিষয়ের জন্য ২শত ৫০টাকা নেয়া হয়। এছাড়াও কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাবজেক্ট প্রতি ১শত টাকা করে মোট ৬শ করে টাকা আদায় করা হয়েছে। ওই কলেজে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭৫০। এর মধ্যে বিএমএ শাখায় ৩৫০, বিজ্ঞান শাখায় ৯০, মানবিক শাখায় ২৫০ এবং ব্যবসায়ী শাখায় ৬০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মোট আদায়কৃত টাকা সাড়ে ৪লাখ থেকে ৫লাখ টাকা বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছেন।

পরিক্ষার নম্বর হাড়ানোর ভয়ে মুখ খুলতে ভয় পান শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। সকলে নিরবে সহ্য করছেন। ভয়ে পরীক্ষার্থীরা ওই টাকা দিয়েই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

প্রায় একই চিত্র উপজেলার নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজ, কালিশুরী, ধুলিয়া, কাছপাড়া, নুরাইনপুর, কেশবপুরসহ উপজেলার ১০টি ডিগ্রী কলেজের। এসকল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই হারে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে মুখ খুলতে সাহস পান না শিক্ষার্থীরা। অনেকের সাথে কথা বলতে গেলে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য অন্যায়ভাবে টাকা আদায় করা হয়েছে। সামর্থ না থাকার সত্তে¡ও স্যারের টাকা পরিষোধ করতে হয়েছে।

শিক্ষার্থী হান্নান জানান, তার কাছে স্যার ৫শত টাকা দাবি করেন। পরে অনেক রিকোয়েস্ট করে ২৫০টাকা দিয়েছেন। মিরাজ নামের অপর এক শিক্ষার্থী জানান, তার কাছ থেকে ৩ বিষয়ের পরিক্ষার জন্য ৪শত টাকা নিয়েছেন।

কারিগরি শাখার লাবনী নামের অপর শিক্ষার্থী বলেন, বিএমএ শাখার প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাবজেক্ট প্রতি ১শত টাকা করে মোট ৬শত টাকা করে আদায় করা হয়েছে।

এবিষয়ে ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, টাকা নেওয়ার কোন বিধান নাই। কিন্তু আগে থেকে তারা নিয়ে আসছেন তাই এবছরও সামান্য কিছু নিচ্ছেন।

নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজের অধ্যাক্ষ মো. আবদুল মালেক বলেন, এ সকল পরিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২শত ৫০টাকা করে নেয়া হয়েছে। এ টাকা পরিক্ষার এক্সট্রানাল টিমসহ যাবতীয় খরচ বহন করতে ব্যায় করতে হয়। পরিক্ষর সময় অনেক খরচ থাকে।

তবে ভিন্ন মত দিয়েছেন কাছিপাড়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো সহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ব্যবহারিক বিষয়ের শিক্ষক আলাদা। তারা টাকা আদায় করেন। তারা কি কাজে খরচ করেন সেটা তারা জানে না। কলেজ কোনভাবে তাদের দায় নেবে না। আমি ওই টাকার বিষয়ে কিছৃু জানি না।’

এবিষয়ে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমি শিক্ষাবোর্ড বরিশালের পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বলেন, ‘ব্যবহারিক পরিক্ষার জন্য একটা ফি নির্ধারণ করা হয়। সেটা ফরম ফিলাপের সাথে নিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন যদি কেউ টাকা অদায় করে সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এব্যপারে স্থানীয় প্রসাশনের সহায়তা নিতে পারেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads